দীর্ঘদিন পুরুষ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শেওরাপাড়ায় নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গতকাল সন্ধ্যায় রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন এবং সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিকৃত যৌনাচারের শিকার শিক্ষার্থীদের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এর আগে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ড. এরশাদ হালিমকে সকল ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু বিরত রাখা হয়।
আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, ড. এরশাদ হালিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে। যেহেতু তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন না, তাই এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ড. এরশাদ হালিম রুমের আলো নিভিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের কাছে শারীরিক স্পর্শ দাবি করতেন, জোরপূর্বক স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করতেন।
একজন শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষার সহায়তার আশ্বাস দিয়ে তাকে বাসায় ডেকে শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করা হয় এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করা হয়। এতে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
অন্য একজন শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষাসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধ্যাপক তাকে একাধিকবার বাসায় ডেকে নেন এবং ঘরে একা পেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক স্পর্শ করেন। তিনি যদি বাধা দিতেন, বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতেন। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থী স্বাভাবিকভাবে ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না।
ডাকসুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল হায়দার বলেন, গত কয়েকদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কর্তৃক দুইজন ছাত্র যৌন হয়রানির শিকার হয়। ভুক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করলে সেই শিক্ষককে সকল ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ঢাবি প্রতিনিধি 























