০৯:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

‘কুড়িগ্রামে কোনো অনুষ্ঠানে এত দর্শক হয়নি’

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৩৩:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • 74

ছবি সংগৃহিত

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ এবার পৌঁছে গেছে দেশের উত্তরের প্রান্তে—সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে। দেড় শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ধারণ করা হয়েছে এবারের পর্বটি। এটি প্রচারিত হবে আগামী ৩১ অক্টোবর, শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর, বাংলাদেশ টেলিভিশনে। সব সময়ের মতো এবারের পর্বটিও রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।

আরো পড়ুন:  চাকসু : ভিপি-জিএসসহ ২৪ পদে ছাত্রশিবির জয়ী, এজিএস পদে ছাত্রদল জয়ী

উৎসবমুখর কুড়িগ্রামে ইত্যাদি ধারণ

নব্বইয়ের দশক থেকেই দেশের প্রান্তিক অঞ্চল, ইতিহাস ও সংস্কৃতির ভেতরে প্রবেশ করে অনুষ্ঠান ধারণ করছে ‘ইত্যাদি’। প্রতিবারের মতো এবারও হানিফ সংকেত ও তাঁর ফাগুন অডিও ভিশন দল বেছে নিয়েছেন এমন একটি স্থান, যেখানে ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি, ভাওয়াইয়া সংগীত ও প্রকৃতি মিলেমিশে আছে এক অনন্য ঐতিহ্যে।
কুড়িগ্রাম—প্রকৃতি আর ভাওয়াইয়ার সুর মিশে আছে মানুষের জীবনযাত্রায়।এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠান ধারণের দিন সকাল থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে কুড়িগ্রাম শহর ও আশপাশের অঞ্চল। দুপুরের পর থেকেই উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুলের মাঠে ভিড় জমতে থাকে দর্শকের। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিশেষ আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়, কিন্তু নির্ধারিত আসনের বাইরে হাজারো মানুষ রাস্তা, ছাদ ও গাছের নিচে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন প্রিয় অনুষ্ঠানটির শুটিং। স্থানীয়রা জানান, ইতিপূর্বে কুড়িগ্রামে কখনো কোনো অনুষ্ঠানে এত দর্শক সমাগম হয়নি।

ভাওয়াইয়ার সুরে

উত্তরাঞ্চলের প্রাণের সংগীত ভাওয়াইয়াকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে এবারের সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান অংশ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুড়িগ্রামের কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় পরিবেশিত হয় একটি পরিচিতিমূলক গান, যার কণ্ঠ দিয়েছেন রাজিব ও তানজিনা রুমা, সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন মেহেদীর। গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা করেন স্থানীয় অর্ধশতাধিক নৃত্যশিল্পী, কোরিওগ্রাফি করেছেন এস কে জাহিদ।
আরও একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাসউদ্দীনের বিখ্যাত গান ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই’—যা নতুনভাবে পরিবেশন করেছেন এই প্রজন্মের গায়িকা সালমা আক্তার এবং উত্তরাঞ্চলের শিল্পী পূর্ণচন্দ্র রায়। পুরোনো সুর সংরক্ষণ করে গানটির নতুন সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।ইত্যাদির নিয়মিত দর্শকপর্বেও ছিল কুড়িগ্রামকেন্দ্রিক এক বিশেষ আয়োজন।
দর্শকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত চারজন অংশগ্রহণ করেন ভাওয়াইয়া সংগীত নিয়ে সাজানো প্রশ্নোত্তর ও পরিবেশনায়। বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির যন্ত্রশিল্পীদের সহযোগিতায় উপস্থাপিত হয় মনোমুগ্ধকর সেই অংশটি, যেখানে দর্শকেরা গাইতে থাকেন—ভাওয়াইয়ার হৃদয়ছোঁয়া সুর, যা কুড়িগ্রামের মানুষের গর্ব ও আত্মার ভাষা।

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মানুষ

ইত্যাদির এই পর্বেও রয়েছে কয়েকটি তথ্যভিত্তিক ও মানবিক প্রতিবেদন, যার মধ্যে উঠে এসেছে কুড়িগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রামী মানুষের গল্প। জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলো—মহারানী স্বর্ণময়ী, বীর প্রতীক তারামন বিবি, জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর বাড়ি ও চিলমারী নদীবন্দর নিয়ে রয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন। বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমি ও এর প্রতিষ্ঠাতা ভূপতি ভূষণ বর্মাকে নিয়ে রয়েছে একটি বিস্তারিত ফিচার প্রতিবেদন, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে ভাওয়াইয়া সংগীত সংরক্ষণে তাঁর অবদান।
২০১১ সালের জুলাই মাসে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে কুড়িগ্রামের কর্মোদ্যোগী যুবক আবদুল কাদেরের গল্প দেখানো হয়েছিল; এবারের ইত্যাদিতে সেই প্রতিবেদনটির ফলোআপও থাকছে।
এ ছাড়া রয়েছে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের জীবন-জীবিকা, সম্ভাবনা ও সংগ্রাম নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে রিকতা আখতার বানু নির্মিত বিদ্যালয়ের মানবিক প্রতিবেদন।

বিদেশি প্রতিবেদন ও নাট্যাংশ

বিদেশি প্রতিবেদনে এবার দেখা যাবে আধুনিক স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দুই বিস্ময়— সিঙ্গাপুরের সেন্ট জনস আইল্যান্ড ও রহস্যময় কুসু দ্বীপ।
ইত্যাদির নিয়মিত চিঠিপত্র পর্ব ছাড়াও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর কয়েকটি নাট্যাংশ, যেমন—‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’, ‘ভাইরাল ভাইরাস’, ‘বিজ্ঞের ভাব ধরা অজ্ঞ’, ‘উপহার উৎপাত’, ‘দায়বোধ বনাম আয়বোধ’ প্রভৃতি।এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন আবদুল আজিজ, সোলায়মান খোকা, আবদুল্লাহ রানা, সুভাশীষ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান, মুকিত জাকারিয়া, আমিন আজাদ, শাহেদ আলী, আশরাফুল আলম সোহাগ, তারিক স্বপন, নিপু, আবু হেনা রনি, শাওন মজুমদার, সাবরিনা নিসা, জামিল হোসেন, রিমু রোজা খন্দকার, সাদিয়া তানজিন, সুজাত শিমুল, হানিফ পালোয়ান, নজরুল ইসলাম, সূচনা শিকদার, রাজীব সালেহীন, বেলাল আহমেদ মুরাদসহ আরও অনেকে।

জনপ্রিয়

লকডাউন সফল করো’ স্লোগানে বান্দরবানের লামায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের মিছিল, আটক ১

‘কুড়িগ্রামে কোনো অনুষ্ঠানে এত দর্শক হয়নি’

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৩:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ এবার পৌঁছে গেছে দেশের উত্তরের প্রান্তে—সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে। দেড় শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ধারণ করা হয়েছে এবারের পর্বটি। এটি প্রচারিত হবে আগামী ৩১ অক্টোবর, শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর, বাংলাদেশ টেলিভিশনে। সব সময়ের মতো এবারের পর্বটিও রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।

আরো পড়ুন:  চাকসু : ভিপি-জিএসসহ ২৪ পদে ছাত্রশিবির জয়ী, এজিএস পদে ছাত্রদল জয়ী

উৎসবমুখর কুড়িগ্রামে ইত্যাদি ধারণ

নব্বইয়ের দশক থেকেই দেশের প্রান্তিক অঞ্চল, ইতিহাস ও সংস্কৃতির ভেতরে প্রবেশ করে অনুষ্ঠান ধারণ করছে ‘ইত্যাদি’। প্রতিবারের মতো এবারও হানিফ সংকেত ও তাঁর ফাগুন অডিও ভিশন দল বেছে নিয়েছেন এমন একটি স্থান, যেখানে ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি, ভাওয়াইয়া সংগীত ও প্রকৃতি মিলেমিশে আছে এক অনন্য ঐতিহ্যে।
কুড়িগ্রাম—প্রকৃতি আর ভাওয়াইয়ার সুর মিশে আছে মানুষের জীবনযাত্রায়।এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠান ধারণের দিন সকাল থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে কুড়িগ্রাম শহর ও আশপাশের অঞ্চল। দুপুরের পর থেকেই উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুলের মাঠে ভিড় জমতে থাকে দর্শকের। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিশেষ আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়, কিন্তু নির্ধারিত আসনের বাইরে হাজারো মানুষ রাস্তা, ছাদ ও গাছের নিচে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন প্রিয় অনুষ্ঠানটির শুটিং। স্থানীয়রা জানান, ইতিপূর্বে কুড়িগ্রামে কখনো কোনো অনুষ্ঠানে এত দর্শক সমাগম হয়নি।

ভাওয়াইয়ার সুরে

উত্তরাঞ্চলের প্রাণের সংগীত ভাওয়াইয়াকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে এবারের সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান অংশ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুড়িগ্রামের কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় পরিবেশিত হয় একটি পরিচিতিমূলক গান, যার কণ্ঠ দিয়েছেন রাজিব ও তানজিনা রুমা, সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন মেহেদীর। গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা করেন স্থানীয় অর্ধশতাধিক নৃত্যশিল্পী, কোরিওগ্রাফি করেছেন এস কে জাহিদ।
আরও একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাসউদ্দীনের বিখ্যাত গান ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই’—যা নতুনভাবে পরিবেশন করেছেন এই প্রজন্মের গায়িকা সালমা আক্তার এবং উত্তরাঞ্চলের শিল্পী পূর্ণচন্দ্র রায়। পুরোনো সুর সংরক্ষণ করে গানটির নতুন সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।ইত্যাদির নিয়মিত দর্শকপর্বেও ছিল কুড়িগ্রামকেন্দ্রিক এক বিশেষ আয়োজন।
দর্শকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত চারজন অংশগ্রহণ করেন ভাওয়াইয়া সংগীত নিয়ে সাজানো প্রশ্নোত্তর ও পরিবেশনায়। বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির যন্ত্রশিল্পীদের সহযোগিতায় উপস্থাপিত হয় মনোমুগ্ধকর সেই অংশটি, যেখানে দর্শকেরা গাইতে থাকেন—ভাওয়াইয়ার হৃদয়ছোঁয়া সুর, যা কুড়িগ্রামের মানুষের গর্ব ও আত্মার ভাষা।

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মানুষ

ইত্যাদির এই পর্বেও রয়েছে কয়েকটি তথ্যভিত্তিক ও মানবিক প্রতিবেদন, যার মধ্যে উঠে এসেছে কুড়িগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রামী মানুষের গল্প। জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলো—মহারানী স্বর্ণময়ী, বীর প্রতীক তারামন বিবি, জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর বাড়ি ও চিলমারী নদীবন্দর নিয়ে রয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন। বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমি ও এর প্রতিষ্ঠাতা ভূপতি ভূষণ বর্মাকে নিয়ে রয়েছে একটি বিস্তারিত ফিচার প্রতিবেদন, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে ভাওয়াইয়া সংগীত সংরক্ষণে তাঁর অবদান।
২০১১ সালের জুলাই মাসে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে কুড়িগ্রামের কর্মোদ্যোগী যুবক আবদুল কাদেরের গল্প দেখানো হয়েছিল; এবারের ইত্যাদিতে সেই প্রতিবেদনটির ফলোআপও থাকছে।
এ ছাড়া রয়েছে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের জীবন-জীবিকা, সম্ভাবনা ও সংগ্রাম নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে রিকতা আখতার বানু নির্মিত বিদ্যালয়ের মানবিক প্রতিবেদন।

বিদেশি প্রতিবেদন ও নাট্যাংশ

বিদেশি প্রতিবেদনে এবার দেখা যাবে আধুনিক স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দুই বিস্ময়— সিঙ্গাপুরের সেন্ট জনস আইল্যান্ড ও রহস্যময় কুসু দ্বীপ।
ইত্যাদির নিয়মিত চিঠিপত্র পর্ব ছাড়াও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর কয়েকটি নাট্যাংশ, যেমন—‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’, ‘ভাইরাল ভাইরাস’, ‘বিজ্ঞের ভাব ধরা অজ্ঞ’, ‘উপহার উৎপাত’, ‘দায়বোধ বনাম আয়বোধ’ প্রভৃতি।এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন আবদুল আজিজ, সোলায়মান খোকা, আবদুল্লাহ রানা, সুভাশীষ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান, মুকিত জাকারিয়া, আমিন আজাদ, শাহেদ আলী, আশরাফুল আলম সোহাগ, তারিক স্বপন, নিপু, আবু হেনা রনি, শাওন মজুমদার, সাবরিনা নিসা, জামিল হোসেন, রিমু রোজা খন্দকার, সাদিয়া তানজিন, সুজাত শিমুল, হানিফ পালোয়ান, নজরুল ইসলাম, সূচনা শিকদার, রাজীব সালেহীন, বেলাল আহমেদ মুরাদসহ আরও অনেকে।