আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তাদের শাসনামলে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার, জেড ফোর্সের অধিনায়ক জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে রাজাকার, পাকিস্তানের গুপ্তচরসহ নানা উপাধিতে আখ্যায়িত করেছিল। তার খেতাবও কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ তা মেনে নেয়নি। অবশেষে তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের ওপর লানত পড়েছে।
গত ১লা সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. শফিকুল ইসলাম কানুকে (গেরিলা লিডার ‘৭১) মুক্তিযোদ্ধা সংসদ লালমনিরহাট জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক মনোনীত করায় কতিপয় দলীয় ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পর অবৈধভাবে তালিকাভুক্ত কথিত ঢুলি মুক্তিযোদ্ধাদের গাত্রদাহ শুরু হয়। তারা নানা রূপ অপকৌশলের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. শফিকুল ইসলাম কানুর (গেরিলা লিডার ‘৭১) বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক, জামুকাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ভিত্তিহীন, মানহানিকর ও বানোয়াট অভিযোগ পেশ করে। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ লালমনিরহাট ইউনিট কমান্ডের কমপ্লেক্স ভবনে অনুপ্রবেশ করে সংবাদ সম্মেলনও করে।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. শফিকুল ইসলাম কানুকে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার হিসেবে আখ্যায়িত করার অপচেষ্টা করা হয়। অথচ তার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর একজন অনুসারী ও ভক্ত মাত্র। তিনি স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। যুক্ত থাকলে অনেকের মতো গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে চলতে পারতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাল-সবুজের পতাকা অর্জন করেছেন। আল্লাহ পাক চাইলে তিনি স্বতন্ত্র কিংবা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এমপি বা মন্ত্রীও হতে পারেন।
এরূপ নিকৃষ্ট চক্রের অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য কতিপয় ব্যক্তি তাকে অনুরোধ করেছেন। তাই অভিযোগ বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। তার পিতা মরহুম ওলিউদ্দিন আহমেদ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের নিপীড়নমূলক আইনে তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি পাকিস্তান আমলে আওয়ামী লীগের রংপুর জেলার কালীগঞ্জ থানা শাখার সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার আদিনিবাস কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মালগাড়া গ্রামে। তিনি ১৯৫৬ সাল থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত গোড়ল ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মরহুম ওলিউদ্দিন আহমেদ মুজিবনগর সরকারের কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ ও শরণার্থী শিবির পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করে মুজিবনগর সরকারকে প্রদান করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে জনবল গঠনে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও করেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য যুবকদের ভারতে পাঠিয়েছিলেন। তাই তার সন্তান এস. এম. শফিকুল ইসলাম কানু, ভাই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুস সাত্তার, তার আপন ভাইয়ের পুত্র কোম্পানি কমান্ডার মরহুম নুরুল ইসলাম—ভারতের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
কাজেই তার পরিবারকে রাজাকার পরিবার বলা এবং তাকে বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করা জিয়াউর রহমানকে রাজাকার বা পাকিস্তানের গুপ্তচর বলাের মতোই জঘন্য ধৃষ্টতা মাত্র। তাই অভিযোগকারী ও তাদের প্রভুদের ‘বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকানো’ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। একজন সশস্ত্র গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার সম্মুখযুদ্ধে মৃত্যু অনিবার্য। তিনি মৃত্যুকে জয় করেছেন। তার আবার কিসের মৃত্যুভয়? তাই তো সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের লাশকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

এবিএন ডেস্ক 


















