০২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে: বিডা চেয়ারম্যান

  • এবিএন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০২:১০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • 10

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন মন্তব্য করেছেন যে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ‘কনফিডেন্স বুস্টার’ বা আস্থা বর্ধক হিসেবে কাজ করবে।

বিডা চেয়ারম্যানের মতে, এই ঘটনাটি সিগন্যাল দেয় যে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পূর্বশর্ত। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার এই আভাস বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণে উৎসাহিত করবে।

দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গত সপ্তাহে আরও একটি বড় সাফল্যের কথা জানিয়েছেন বিডা চেয়ারম্যান। তিনি জানান, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) সংক্রান্ত আলোচনা বা নেগোশিয়েশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এই ধরণের চুক্তিকে অপরিহার্য বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলো যেখানে এফটিএ বা ইপিএ চুক্তিতে অনেক এগিয়ে, সেখানে বাংলাদেশের এমন চুক্তির সংখ্যা ছিল শূন্য। জাপানের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেই বন্ধ্যাত্ব কাটাতে যাচ্ছে।

 

এর ফলে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে পলিসি কনটিনুইটি ও আইনি সুরক্ষার বিষয়ে একটি পরিষ্কার ফ্রেমওয়ার্ক পাবে, যা আগামী দিনে আইটি, লজিস্টিকস, অটোমোটিভ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।

জাপানের সঙ্গে এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে বিশাল সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করেন চৌধুরী আশিক মাহমুদ। চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশ পোশাকসহ ৭ হাজার ৩৭৯টি পণ্যে জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। বিনিময়ে জাপান ১ হাজার ৩৯টি পণ্যে বাংলাদেশের বাজারে একই সুবিধা পাবে।

এ ছাড়া সেবা বাণিজ্য খাতেও দুই দেশ বড় ধরনের অঙ্গীকার করেছে, যেখানে জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাত উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিডা চেয়ারম্যানের মতে, গত ৫৪ বছরে জাপানি বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলার হলেও এই চুক্তির পর তা গুণগত ও পরিমাণগত দিক থেকে বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের তরুণদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হবে।

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুত এ ধরনের চুক্তি সম্পন্ন করাকে বড় সমাধান হিসেবে দেখছেন বিডা চেয়ারম্যান। তিনি জানান, এই প্রথমবার বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করা হচ্ছে যারা এ ধরনের জটিল নেগোশিয়েশনে পারদর্শী হয়ে উঠছে।

ইতোমধ্যে আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তুরস্কের সঙ্গেও প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে। ২০২৫ সালে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের একটি মজবুত ভিত্তি গড়ার চেষ্টা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী নির্বাচিত সরকার এই উদ্যোগগুলো থেকে উপকৃত হবে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

 

জনপ্রিয়

সিলেট-৬ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন ফয়সল আহমদ

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে: বিডা চেয়ারম্যান

প্রকাশের সময় : ০২:১০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন মন্তব্য করেছেন যে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ‘কনফিডেন্স বুস্টার’ বা আস্থা বর্ধক হিসেবে কাজ করবে।

বিডা চেয়ারম্যানের মতে, এই ঘটনাটি সিগন্যাল দেয় যে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পূর্বশর্ত। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার এই আভাস বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণে উৎসাহিত করবে।

দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গত সপ্তাহে আরও একটি বড় সাফল্যের কথা জানিয়েছেন বিডা চেয়ারম্যান। তিনি জানান, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) সংক্রান্ত আলোচনা বা নেগোশিয়েশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এই ধরণের চুক্তিকে অপরিহার্য বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলো যেখানে এফটিএ বা ইপিএ চুক্তিতে অনেক এগিয়ে, সেখানে বাংলাদেশের এমন চুক্তির সংখ্যা ছিল শূন্য। জাপানের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেই বন্ধ্যাত্ব কাটাতে যাচ্ছে।

 

এর ফলে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে পলিসি কনটিনুইটি ও আইনি সুরক্ষার বিষয়ে একটি পরিষ্কার ফ্রেমওয়ার্ক পাবে, যা আগামী দিনে আইটি, লজিস্টিকস, অটোমোটিভ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।

জাপানের সঙ্গে এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে বিশাল সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করেন চৌধুরী আশিক মাহমুদ। চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশ পোশাকসহ ৭ হাজার ৩৭৯টি পণ্যে জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। বিনিময়ে জাপান ১ হাজার ৩৯টি পণ্যে বাংলাদেশের বাজারে একই সুবিধা পাবে।

এ ছাড়া সেবা বাণিজ্য খাতেও দুই দেশ বড় ধরনের অঙ্গীকার করেছে, যেখানে জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাত উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিডা চেয়ারম্যানের মতে, গত ৫৪ বছরে জাপানি বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলার হলেও এই চুক্তির পর তা গুণগত ও পরিমাণগত দিক থেকে বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের তরুণদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হবে।

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুত এ ধরনের চুক্তি সম্পন্ন করাকে বড় সমাধান হিসেবে দেখছেন বিডা চেয়ারম্যান। তিনি জানান, এই প্রথমবার বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করা হচ্ছে যারা এ ধরনের জটিল নেগোশিয়েশনে পারদর্শী হয়ে উঠছে।

ইতোমধ্যে আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তুরস্কের সঙ্গেও প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে। ২০২৫ সালে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের একটি মজবুত ভিত্তি গড়ার চেষ্টা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী নির্বাচিত সরকার এই উদ্যোগগুলো থেকে উপকৃত হবে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।