সিরাজগঞ্জ-১ আসনের (কাজিপুর ও সদর উপজেলার চার ইউনিয়ন) রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা গ্রামে ইছামতি নদীর উপর একটি ব্রিজ না থাকায় তিন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। স্বাধীনতার পর থেকেই স্থানীয়দের দাবি থাকলেও এখনো পর্যন্ত সেখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মিত হয়নি।
শনিবার সরেজমিনে একডালা ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নদীর উপর বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি একটি অস্থায়ী সাঁকো দিয়েই পারাপার হচ্ছে মানুষ। স্থানীয় রবি নিজ উদ্যোগে সাঁকোটি তৈরি করে পারাপারের বিনিময়ে সামান্য টাকা নেন। তিনি জানান, বর্ষায় যখন সাঁকো ভেসে যায়, তখন খেয়া নৌকাই একমাত্র ভরসা। বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার খাটিয়ামারী, মথুরাপুর, কাশিয়াহাটা, বিষারদিয়ার, শালুয়াবাড়ীসহ ৮–১০ গ্রামের মানুষও এই ঘাট ব্যবহার করে রতনকান্দি ও একডালা হাটে আসেন।
স্থানীয়রা বলেন, “নদী ভাঙনের কারণে আমাদের অনেকেই পশ্চিম পাড়ে চলে গেছি। কিন্তু প্রতিদিন এই ঘাট পার হতে গিয়ে সময় ও কষ্ট দুই-ই বেশি। বর্ষায় কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি ভেসে যায়, তখন নৌকা ছাড়া উপায় থাকে না।”
অশীতিপর চান আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “দেশে অনেক উন্নয়ন হইছে, কিন্তু আমাগো এই ঘাটে একটা ব্রিজ হইলো না। মরার আগে একটা পাকা ব্রিজ দেইখা যাই।”
ধুনটের খাটিয়ামারী গ্রামের কৃষক কিরণ জানান, বর্ষায় ফসল ও মালামাল নিয়ে নদী পারাপারে ঝুঁকি নিতে হয়। অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে গেছে। একটি পাকা ব্রিজ হলে তাদের দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হতো।
একডালার স্থানীয় মুরব্বি রহিম ও রৌফ মিয়া বলেন, “নদীর পশ্চিমের চরে এখন দুই শতাধিক পরিবার বসবাস করছে। স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসাও গড়ে উঠেছে। ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হয়। তাই একটি স্থায়ী ব্রিজ অত্যন্ত জরুরি।”
সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউর রহমান জানান, “বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। শিগগিরই সমীক্ষা চালানো হবে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুতই সেখানে ঢালাই ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।”
স্থানীয়দের আশা—দীর্ঘদিনের এই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ইছামতির উপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে তাদের দুর্ভোগের শেষ হবে।

জলিলুর রহমান জনি, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি 


















