লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বয়ারচর এলাকায় নদী ভাঙন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছেন। চলমান নদী ভাঙনের কারণে বয়ারচর ও আশপাশের এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১০টায় বয়ারচর এলাকায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারা অংশগ্রহণ করেন।
নদী ভাঙনের প্রভাব: জীবনের নিরাপত্তায় বড় চ্যালেঞ্জ
বয়ারচর ও চরগাজী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বর্তমানে নদীর পানিতে বিলীন হওয়ার পরিণতি মুখে পড়েছে। নদী ভাঙনের ফলে বহু বসতঘর, স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন, যা তাদের শিক্ষার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষও নিজেদের জমি ও সম্পদ রক্ষা করতে পারছেন না।
স্থানীয়দের দাবি ও বাস্তবতা
মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, বারবার এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নদী ভাঙন সম্পর্কে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। খেটে খাওয়া এই মানুষদের নিজেদের পক্ষে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের সামর্থ্য নেই। তাই সরকারের তৎপর হবার কোন বিকল্প নেই।
ইব্রাহিম খলিল দিদার, ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বলেন, “আমাদের জমি ও বসতভূমি রক্ষায় দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি। নদী ভাঙন থামানো না গেলে আগামী বছর আরও বেশি এলাকা পানির নীচে চলে যাবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাব্য প্রভাব
মানববন্ধনে বক্তারা আরও জানান, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদী ভাঙন আরও তীব্র হবে, যা এলাকা থেকে মানুষের বসবাস স্থায়ীভাবে সরিয়ে দেবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার শঙ্কা আছে, যা স্থানীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাবে। এছাড়াও, নদী ভাঙনের ফলে সেচ ও কৃষি কাজও বাধাগ্রস্ত হবে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান
বক্তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে বয়ারচরে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করতে হবে। না হলে, স্থানীয়রা কঠোর আন্দোলন এবং আরও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রামগতি উপজেলার এই নদী ভাঙনের সমস্যা শুধু স্থানীয় নয়, এটি দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সমুদ্র ও নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে এ ধরনের সমস্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। তাই সঠিক পরিকল্পনা ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে নদী ভাঙন রোধ করা দেশের নিরাপত্তারও একটি অংশ। জনসাধারণের সচেতনতা ও সরকারের সক্রিয় ভূমিকা এ ক্ষেত্রে অপরিহার্য।

আবু সালমান, লক্ষ্মীপুর 


















