১২:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নাসিরনগরের মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার এমপিওভুক্ত খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা গত ২৭ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে মাদ্রাসার বাজেটভুক্ত কোনো ধরনের মেরামত বা উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ফান্ডের বিপুল পরিমাণ টাকার হিসাবও পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগকারীদের দাবি, মেয়াদোত্তীর্ণ ম্যানেজিং কমিটির নাম ব্যবহার করে কোনো বৈধ সভা ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটির বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সুপার জহিরুল ইসলাম। এমনকি স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও তুলেছেন তারা।

শিক্ষকদের অভিযোগ, সুপার মাদ্রাসার বিভিন্ন খাতের অর্থ এককভাবে ব্যবহার করছেন এবং কোনোভাবে স্বচ্ছ হিসাব দিচ্ছেন না। ভর্তির টাকা, মাঠ সংস্কার, ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়সহ নানা আর্থিক লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, মানসিক নির্যাতন এবং অপমানজনক ভাষা ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করেছে অভিযোগকারীরা।
এছাড়া শিক্ষক বদলি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও করেছেন শিক্ষক–কর্মচারীরা। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাদের। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হলেও তা অফিসিয়াল রেকর্ডে দেখানো হয়নি।
শিক্ষকরা জানান, এসব অনিয়মের কারণে মাদ্রাসার স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে; শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত তদন্ত করে সুপারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগকারীরা আরও বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রভাব ব্যবহার করে সুপার তাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন।
অভিযুক্ত সুপার জহিরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অভিযোগগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। কারও অভিযোগ থাকলে আমি তার সমাধান করে দেব।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন ভট্টাচার্য বলেন, “এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা হওয়ায় আমাদের এখতিয়ার সীমিত। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
এ বিষয়ে নাসিরনগরের ইউএনও শাহিনা নাসরিন বলেন, “শিক্ষকরা একবার নিজেদের মধ্যে বসে আপসের চেষ্টা করেছিলেন। গুরুতর অভিযোগগুলো যাচাই করে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জনপ্রিয়

হাসনাত আবদুল্লাহর জন্য নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জামায়াতের প্রার্থী

নাসিরনগরের মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ!

প্রকাশের সময় : ০৩:৫১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার এমপিওভুক্ত খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা গত ২৭ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, টানা তিন বছর ধরে মাদ্রাসার বাজেটভুক্ত কোনো ধরনের মেরামত বা উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ফান্ডের বিপুল পরিমাণ টাকার হিসাবও পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগকারীদের দাবি, মেয়াদোত্তীর্ণ ম্যানেজিং কমিটির নাম ব্যবহার করে কোনো বৈধ সভা ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটির বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সুপার জহিরুল ইসলাম। এমনকি স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও তুলেছেন তারা।

শিক্ষকদের অভিযোগ, সুপার মাদ্রাসার বিভিন্ন খাতের অর্থ এককভাবে ব্যবহার করছেন এবং কোনোভাবে স্বচ্ছ হিসাব দিচ্ছেন না। ভর্তির টাকা, মাঠ সংস্কার, ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়সহ নানা আর্থিক লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, মানসিক নির্যাতন এবং অপমানজনক ভাষা ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করেছে অভিযোগকারীরা।
এছাড়া শিক্ষক বদলি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও করেছেন শিক্ষক–কর্মচারীরা। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাদের। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হলেও তা অফিসিয়াল রেকর্ডে দেখানো হয়নি।
শিক্ষকরা জানান, এসব অনিয়মের কারণে মাদ্রাসার স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে; শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত তদন্ত করে সুপারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগকারীরা আরও বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রভাব ব্যবহার করে সুপার তাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন।
অভিযুক্ত সুপার জহিরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অভিযোগগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। কারও অভিযোগ থাকলে আমি তার সমাধান করে দেব।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবন ভট্টাচার্য বলেন, “এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা হওয়ায় আমাদের এখতিয়ার সীমিত। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
এ বিষয়ে নাসিরনগরের ইউএনও শাহিনা নাসরিন বলেন, “শিক্ষকরা একবার নিজেদের মধ্যে বসে আপসের চেষ্টা করেছিলেন। গুরুতর অভিযোগগুলো যাচাই করে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”