০৮:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

ঝিকরগাছায় মহাসড়ক ও ফুটপাত প্রভাবশালীদের অবৈধ দখল : নিরব ভূমিকায় প্রশাসন ও হাইওয়ে থানা

যশোরের ঝিকরগাছায় যানজটের পাশাপশি বাড়ছে দূঘটনায় প্রাণহানী, সব সোজা পথই চলে উল্টো, প্রশাসনের দেখানো মাত্র তদারকিতেও কমছে না দৌরাত্ম্য। প্রভাবশালীদের রামরাজত্বে দখল হতে চলেছে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ও পৌর সদরের ফুটপাত।

পৌর সদরের বাজার সংলগ্ন এই মহাসড়কের ওপর ও সড়কের দু’পাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ কিছু স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় দুই শতাধিক দোকানপাট ও পাহাড় সমান উঁচু মালামাল নিয়ে দুর্দান্ত গতিতে সড়ক-মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব অবৈধ গাড়ি বা থ্রি-হুইলার (অটোরিকশা, ইজি-বাইক, নসিমন-করিমন)। রাস্তায় চলার কোনো অনুমতির নেই। তবুও যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে প্রশিক্ষণবিহীন চালকদের অসাবধানতায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অভিভাবক হারিয়ে পথে বসছে একেকটি পরিবার। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটির ফুটপাত দখলে রয়েছে প্রভাবশালীদের হাতে। এ বিষয়ে আইনগত ভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা থাকলেও নিরব ভূমিকায় স্থানীয় পৌর প্রশাসন ও নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশ। ঘটনার বিষয়ে একাধিকবার পত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর লোক দেখানো এক-দুইদিন কার্যক্রম পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে পৌর সদরের এই বাজারের কথা কর্তৃপক্ষের মনে থাকে না। কিন্তু স্থায়ী ভাবে উচ্ছেদ না করায় কোন লাভ হচ্ছে না। তবে নাভারণ হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ করার কথা বলা হলেও পরিশেষে সেটা সফল করা হয়নি। ক্রমাগতই সাধারণ মানুষের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও হাইওয়ে থানা পুলিশের প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হতে দেখা যাচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (অটোরিকশা, ইজি-বাইক, নসিমন-করিমন) চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালের আগস্টে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই প্রজ্ঞাপনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সড়ক দুর্ঘটনা কমানো, কারণ ধীরগতির এই যানগুলো দ্রুতগামী যানবাহনের সঙ্গে মিশে গিয়ে দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যদিও আইন প্রয়োগে শিথিলতা দেখা গেছে, তবুও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর আছে এবং আইন অনুযায়ী এই যানবাহনগুলো জাতীয় মহাসড়কে চলাচলের অনুমতিপ্রাপ্ত নয়। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ও মহাসড়ককে নিরাপদ রাখতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু আইন প্রয়োগে শিথিলতা ও দুর্নীতির কারণে এই নিষিদ্ধ যানগুলো এখনো মহাসড়কে অবাধে চলছে। ২০১৫ সালের আগস্টে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের ২২টি জাতীয় মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, অটোরিকশা ও অন্যান্য অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন ও আইন হওয়ার পর ২০১৪ ও ২০১৭ সালে মহামান্য হাইকোর্টও মহাসড়কে এই যানগুলোর চলাচল বন্ধে নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মাঝে মাঝে ব্যবস্থা নিলেও, দুর্নীতি ও আইন প্রয়োগে গাফিলতির কারণে এদের অবাধ চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঝিকরগাছা পৌর সদরের কৃর্তিপুর থেকে শুরু করে হাজেরালী বালিখোলা পর্যন্ত যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে উপর ওয়ান্ডিং ওয়ার্কশপ, গাড়ী ধৌত করার স্থান, ফার্ণিচারের মালামাল, স’মিলের বড় বড় কাঠ, ঢেউ টিনের দোকানের টিন, হোটেল-রেস্তরা-ফাস্ট ফুড, বিভিন্ন ফলের স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান, চা-পানের দোকান, জুতা-কাপড়ের দোকান সহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ব্যবসা পরিচালনা করেছে। এছাড়াও আরও বড় সমস্যা হল যশোর-বেনাপোলের ভাড়া চালিত বাস মহাসড়কের মাঝে রেখে যানজট সৃষ্টি ও মহাসড়কের উপর অবৈধ যানবহন বা থ্রি-হুইলার সংক্রান্ত গাড়ির স্ট্যান্ড। আর দু’পাশে দোকানপাট ও থ্রি-হুইলার সংক্রান্ত গাড়ির স্ট্যান্ড থেকে দৈনিক ও মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে সংশ্লিষ্টরা অবৈধভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। ব্যস্থতম এই সড়কে ক্রেতা-বিক্রেতারা দাঁড়িয়ে ক্রয়-বিক্রি করছে বিভিন্ন পণ্য। গাড়ী আসলে অনেক সময় অসাবধনতাবসত বা তাড়াহুড়ো করে কেউ কেউ সরতেও পারেন না। যার ফলে ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। এত বিপদজনক হওয়া সত্যেও এসব দোকানের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধিই পাচ্ছে প্রশাসনের স্থায়ী নজরদারির অভাব রয়েছে।
নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মহাসিন হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিত থ্রি-হুইলারের উপর অভিযান করি এবং আইনগত ব্যবস্থা নি। আর মহাসড়কের পাশে পৌরসভার মধ্যে হলে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাশন বা পৌর প্রশাসন এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। আমাদের যখন ডাকে তখন আমরা সহযোগিতা করি ও সাথে থাকি। মাসিক মাসোয়ারার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ের কোন ভিত্তি নাই।
সহকারী কমিশনার (ভূমি), এক্সক্লুসিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও পৌরসভার প্রশাসক দেবাংশু বিশ্বাস বলেন, আমি নুতন এসেছি, বিষয়টি আমি দেখবো।

জনপ্রিয়

বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার শান্তি কামনায় দুর্গাপুরে দোয়া মাহফিল

ঝিকরগাছায় মহাসড়ক ও ফুটপাত প্রভাবশালীদের অবৈধ দখল : নিরব ভূমিকায় প্রশাসন ও হাইওয়ে থানা

প্রকাশের সময় : ০৬:১৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

যশোরের ঝিকরগাছায় যানজটের পাশাপশি বাড়ছে দূঘটনায় প্রাণহানী, সব সোজা পথই চলে উল্টো, প্রশাসনের দেখানো মাত্র তদারকিতেও কমছে না দৌরাত্ম্য। প্রভাবশালীদের রামরাজত্বে দখল হতে চলেছে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ও পৌর সদরের ফুটপাত।

পৌর সদরের বাজার সংলগ্ন এই মহাসড়কের ওপর ও সড়কের দু’পাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ কিছু স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় দুই শতাধিক দোকানপাট ও পাহাড় সমান উঁচু মালামাল নিয়ে দুর্দান্ত গতিতে সড়ক-মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব অবৈধ গাড়ি বা থ্রি-হুইলার (অটোরিকশা, ইজি-বাইক, নসিমন-করিমন)। রাস্তায় চলার কোনো অনুমতির নেই। তবুও যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে প্রশিক্ষণবিহীন চালকদের অসাবধানতায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অভিভাবক হারিয়ে পথে বসছে একেকটি পরিবার। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটির ফুটপাত দখলে রয়েছে প্রভাবশালীদের হাতে। এ বিষয়ে আইনগত ভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা থাকলেও নিরব ভূমিকায় স্থানীয় পৌর প্রশাসন ও নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশ। ঘটনার বিষয়ে একাধিকবার পত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর লোক দেখানো এক-দুইদিন কার্যক্রম পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে পৌর সদরের এই বাজারের কথা কর্তৃপক্ষের মনে থাকে না। কিন্তু স্থায়ী ভাবে উচ্ছেদ না করায় কোন লাভ হচ্ছে না। তবে নাভারণ হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ করার কথা বলা হলেও পরিশেষে সেটা সফল করা হয়নি। ক্রমাগতই সাধারণ মানুষের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও হাইওয়ে থানা পুলিশের প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হতে দেখা যাচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (অটোরিকশা, ইজি-বাইক, নসিমন-করিমন) চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালের আগস্টে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই প্রজ্ঞাপনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সড়ক দুর্ঘটনা কমানো, কারণ ধীরগতির এই যানগুলো দ্রুতগামী যানবাহনের সঙ্গে মিশে গিয়ে দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যদিও আইন প্রয়োগে শিথিলতা দেখা গেছে, তবুও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর আছে এবং আইন অনুযায়ী এই যানবাহনগুলো জাতীয় মহাসড়কে চলাচলের অনুমতিপ্রাপ্ত নয়। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ও মহাসড়ককে নিরাপদ রাখতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু আইন প্রয়োগে শিথিলতা ও দুর্নীতির কারণে এই নিষিদ্ধ যানগুলো এখনো মহাসড়কে অবাধে চলছে। ২০১৫ সালের আগস্টে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের ২২টি জাতীয় মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, অটোরিকশা ও অন্যান্য অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন ও আইন হওয়ার পর ২০১৪ ও ২০১৭ সালে মহামান্য হাইকোর্টও মহাসড়কে এই যানগুলোর চলাচল বন্ধে নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মাঝে মাঝে ব্যবস্থা নিলেও, দুর্নীতি ও আইন প্রয়োগে গাফিলতির কারণে এদের অবাধ চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঝিকরগাছা পৌর সদরের কৃর্তিপুর থেকে শুরু করে হাজেরালী বালিখোলা পর্যন্ত যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে উপর ওয়ান্ডিং ওয়ার্কশপ, গাড়ী ধৌত করার স্থান, ফার্ণিচারের মালামাল, স’মিলের বড় বড় কাঠ, ঢেউ টিনের দোকানের টিন, হোটেল-রেস্তরা-ফাস্ট ফুড, বিভিন্ন ফলের স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান, চা-পানের দোকান, জুতা-কাপড়ের দোকান সহ প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ব্যবসা পরিচালনা করেছে। এছাড়াও আরও বড় সমস্যা হল যশোর-বেনাপোলের ভাড়া চালিত বাস মহাসড়কের মাঝে রেখে যানজট সৃষ্টি ও মহাসড়কের উপর অবৈধ যানবহন বা থ্রি-হুইলার সংক্রান্ত গাড়ির স্ট্যান্ড। আর দু’পাশে দোকানপাট ও থ্রি-হুইলার সংক্রান্ত গাড়ির স্ট্যান্ড থেকে দৈনিক ও মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে সংশ্লিষ্টরা অবৈধভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। ব্যস্থতম এই সড়কে ক্রেতা-বিক্রেতারা দাঁড়িয়ে ক্রয়-বিক্রি করছে বিভিন্ন পণ্য। গাড়ী আসলে অনেক সময় অসাবধনতাবসত বা তাড়াহুড়ো করে কেউ কেউ সরতেও পারেন না। যার ফলে ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। এত বিপদজনক হওয়া সত্যেও এসব দোকানের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধিই পাচ্ছে প্রশাসনের স্থায়ী নজরদারির অভাব রয়েছে।
নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মহাসিন হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিত থ্রি-হুইলারের উপর অভিযান করি এবং আইনগত ব্যবস্থা নি। আর মহাসড়কের পাশে পৌরসভার মধ্যে হলে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাশন বা পৌর প্রশাসন এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। আমাদের যখন ডাকে তখন আমরা সহযোগিতা করি ও সাথে থাকি। মাসিক মাসোয়ারার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ের কোন ভিত্তি নাই।
সহকারী কমিশনার (ভূমি), এক্সক্লুসিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও পৌরসভার প্রশাসক দেবাংশু বিশ্বাস বলেন, আমি নুতন এসেছি, বিষয়টি আমি দেখবো।