ময়মনসিংহে নানা প্রলোভন দেখিয়ে যুবক, ব্যবসায়ী এমনকি পুলিশ ও সাংবাদিকদেরও ‘হানি ট্র্যাপ’-এর ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ নগরী, ভালুকা ও ত্রিশাল উপজেলায় একটি সংঘবদ্ধ মাফিয়া অপরাধচক্র দীর্ঘদিন ধরে এ অপকর্ম চালিয়ে আসছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, এই চক্রের সঙ্গে অন্তত ২৫ জন নারী সক্রিয়ভাবে জড়িত। তারা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক ভুয়া আইডি ব্যবহার করে প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। পরবর্তীতে ভিডিও কল ও সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে গোপনে ভিডিও ও ছবি ধারণ করে ভুক্তভোগীদের ব্ল্যাকমেইল করা হয়। এর মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করছে চক্রটি।
পুলিশ জানায়, চক্রটির তৎপরতা সবচেয়ে বেশি ত্রিশাল ও ভালুকা এলাকায়। এর মধ্যে ত্রিশালে অন্তত ৫ জন এবং ভালুকায় ১১ জন সদস্য বেপরোয়া অবস্থায় সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি ময়মনসিংহ নগরীতেও তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, ফেসবুকে পরিচয়ের পর নিয়মিত ভিডিও কলে কথা হতো। একপর্যায়ে গোপনে ধারণ করা ভিডিও দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয় এবং পাঁচ লাখ টাকা আদায় করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি যারা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দেন, তারাও এই চক্রকে সহায়তা করেছে। এ ঘটনায় তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ভালুকার শিল্পপতি আমিনুল আজিজ অভিযোগ করে বলেন, “এই চক্র আমার জীবনটাই শেষ করে দিয়েছে। ভিডিও দেখিয়ে আমার কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ত্রিশালে দুইজন ও ভালুকায় পাঁচজন এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত।” তিনিও এ বিষয়ে থানায় জিডি করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করতে তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী এই ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত বিশেষ অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি সাংবাদিকতার পরিচয়ে কেউ এলাকায় কাজ করলে তার পরিচয়পত্র যাচাইসহ প্রশাসনের তদারকি জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

সাজ্জাদ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার,ময়মনসিংহ 





















