০৪:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে জাতীয় প্রাণী সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী-২০২৫ উদ্বোধন 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর ) সাদুল্লাপুর উপজেলায় জাতীয় প্রাণী সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী-২০২৫ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনের এই অনুষ্ঠান প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আধুনিক প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব কাজী মোঃ অনিক ইসলাম। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, “প্রাণিসম্পদ খাত শুধু খাদ্যের উৎস নয়, এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার একটি শক্তিশালী ভিত্তি। দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারগুলো পরিবারভিত্তিক আয়ের নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। সরকার প্রাণিসম্পদ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন আধুনিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার সুফল ইতোমধ্যে খামারিরা পাচ্ছেন। আমরা চাই—উপজেলার প্রতিটি খামার প্রযুক্তিনির্ভর হোক এবং রোগমুক্ত পশুপালনের মাধ্যমে উৎপাদন আরও বাড়ুক। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। সপ্তাহব্যাপী এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে খামারিরা নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং উৎপাদনশীলতা আরও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের লক্ষ্য সাদুল্লাপুরকে প্রাণিসম্পদ খাতে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা।”

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, “প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের মূল উদ্দেশ্য হলো খামারিদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং পশুপালনে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিত করা। সাদুল্লাপুর উপজেলায় খামারির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা নিয়মিতভাবে গবাদিপশুর টিকাদান, কৃমিনাশন, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা সেবা এবং মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ প্রদান করছি। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুধ-ডিম-মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা শুধু সেবা প্রদানই করছি না, বরং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতেও কাজ করছি। খামারিদের যে কোনো প্রয়োজনে প্রাণিসম্পদ দপ্তর সবসময় পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।”
এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, সাদুল্লাপুর, সহযোগিতা করেছে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ তাজউদ্দিন খন্দকার, প্রেসক্লাব সাদুল্লাপুরের সভাপতি জনাব কে এম নেয়ামুল আহসান পায়েল, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও খামারি প্রতিনিধিবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। স্টলগুলোতে স্থানীয় খামারিদের গরু, ছাগল, মহিষ, বিদেশি জাতের কুকুর, খরগোশ, পাখি, হাঁস-মুরগি, দুগ্ধজাত পণ্য, পশুখাদ্য, ভেটেরিনারি ঔষধ, কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি এবং আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনা প্রদর্শন করা হয়। খামারিদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা, সেবা ও তথ্যসেবা প্রদান করা হয়।

আয়োজকরা জানান, এ ধরনের প্রদর্শনী ও সচেতনতামূলক আয়োজন উপজেলার খামারিদের আরও উৎসাহিত করবে এবং প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রম, সেবা প্রদান ও তথ্য প্রচার অব্যাহত থাকবে।

জনপ্রিয়

জাবিতে চ্যাটজিপিটির সাহায্যে চান্স, পরবর্তী ইউনিটের পরীক্ষায় ধরা পড়ল শিক্ষার্থী

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে জাতীয় প্রাণী সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী-২০২৫ উদ্বোধন 

প্রকাশের সময় : ০৭:৩০:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর ) সাদুল্লাপুর উপজেলায় জাতীয় প্রাণী সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী-২০২৫ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনের এই অনুষ্ঠান প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আধুনিক প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব কাজী মোঃ অনিক ইসলাম। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, “প্রাণিসম্পদ খাত শুধু খাদ্যের উৎস নয়, এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার একটি শক্তিশালী ভিত্তি। দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারগুলো পরিবারভিত্তিক আয়ের নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। সরকার প্রাণিসম্পদ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন আধুনিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার সুফল ইতোমধ্যে খামারিরা পাচ্ছেন। আমরা চাই—উপজেলার প্রতিটি খামার প্রযুক্তিনির্ভর হোক এবং রোগমুক্ত পশুপালনের মাধ্যমে উৎপাদন আরও বাড়ুক। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। সপ্তাহব্যাপী এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে খামারিরা নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং উৎপাদনশীলতা আরও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের লক্ষ্য সাদুল্লাপুরকে প্রাণিসম্পদ খাতে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা।”

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, “প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের মূল উদ্দেশ্য হলো খামারিদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং পশুপালনে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিত করা। সাদুল্লাপুর উপজেলায় খামারির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা নিয়মিতভাবে গবাদিপশুর টিকাদান, কৃমিনাশন, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা সেবা এবং মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ প্রদান করছি। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুধ-ডিম-মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা শুধু সেবা প্রদানই করছি না, বরং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতেও কাজ করছি। খামারিদের যে কোনো প্রয়োজনে প্রাণিসম্পদ দপ্তর সবসময় পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।”
এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, সাদুল্লাপুর, সহযোগিতা করেছে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ তাজউদ্দিন খন্দকার, প্রেসক্লাব সাদুল্লাপুরের সভাপতি জনাব কে এম নেয়ামুল আহসান পায়েল, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও খামারি প্রতিনিধিবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। স্টলগুলোতে স্থানীয় খামারিদের গরু, ছাগল, মহিষ, বিদেশি জাতের কুকুর, খরগোশ, পাখি, হাঁস-মুরগি, দুগ্ধজাত পণ্য, পশুখাদ্য, ভেটেরিনারি ঔষধ, কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি এবং আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনা প্রদর্শন করা হয়। খামারিদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা, সেবা ও তথ্যসেবা প্রদান করা হয়।

আয়োজকরা জানান, এ ধরনের প্রদর্শনী ও সচেতনতামূলক আয়োজন উপজেলার খামারিদের আরও উৎসাহিত করবে এবং প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রম, সেবা প্রদান ও তথ্য প্রচার অব্যাহত থাকবে।