বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের বাবুপাড়া এলাকায় মার্মা সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির মৃত্যুদেহ দাহক্রিয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পরিস্থিতি বাড়তে শুরু করলে আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা জহির উদ্দীনের নেতৃত্বে আলীকদম সেনা জোন মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসে এবং সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মৃত ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে মেয়ের বাড়িতে এসে মৃত্যুবরণ করেন। পরে তার স্বজনরা বাবুপাড়ার পুরাতন শ্মশানে দাহ করতে চাইলে একাংশ সমাজনেতা আপত্তি জানান। কারবারি আবু মং মার্মার নেতৃত্বাধীন সমাজ দাবি করে, মৃত ব্যক্তি বাবুপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা নন এবং সমাজের রীতি অনুযায়ী তার দাহক্রিয়া শ্মশানে করা যাবে না। তাদের অভিযোগ, মৃত ব্যক্তির পরিবার আলাদা অবস্থানে থেকে নিজস্ব শ্মশান ব্যবহার করে আসছে।
অন্যদিকে কারবারি উক্যজাই হেডম্যান উল্লেখ করেন, বাবুপাড়ায় দুটি সমাজ থাকলেও শ্মশানটি সবার জন্য ব্যবহারের উপযোগী। তাই কোনো পক্ষেরই সৎকারে বাধা দেওয়ার অধিকার নেই। তিনি আরও বলেন, যেটিকে অন্য সমাজ ‘আদালা শ্মশান’ বলছে, সেটি প্রকৃতপক্ষে ম্রো জনগোষ্ঠীর শ্মশান।
বিরোধের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দীর্ঘ আলোচনার পর উভয় পক্ষের মতামত শোনার ভিত্তিতে মৃত ব্যক্তির দাহক্রিয়া বাবুপাড়া পুরাতন শ্মশানে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় আলীকদমের মার্মা সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন বিরোধ এড়াতে দুই সমাজের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় আরও জোরদার করা হবে।

ফরহাদ আহমদ সজল, বান্দরবান 


















