১০:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

আলীকদমে প্রবীণ ব্যক্তির সৎকারে বাধা, গ্রামে উত্তেজনা বিরাজমান

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের বাবুপাড়ায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এক প্রবীণ ব্যক্তির দাহ কার্য সম্পাদনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বাবুপাড়ার বাসিন্দা ময়েচিং মার্মা (৬৮) মারা যান। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ২টায় বাবুপাড়া শ্মশানে তাঁর দাহ কার্য সম্পন্নের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে মৃতের আত্মীয়-স্বজন অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় কয়েকজন সামাজিক নেতা—সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফোগ্য মার্মা ও পাড়ার কার্বারী আবুমং মার্মা—দাহ কার্য সম্পাদনে বাধা দিচ্ছেন।

পরিবারের অভিযোগের পর এলাকাবাসী স্থানীয়ভাবে সালিসের উদ্যোগ নেন। সকলেই মৃত ব্যক্তির ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সৎকারে বাধা না দেওয়ার অনুরোধ জানালেও আপত্তিকারী পক্ষের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে দাহ কার্যকে ঘিরে সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, “মৃত ব্যক্তিকে শ্মশানে দাহ করা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সামাজিক বিরোধ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি।”

এর আগে, ২০২৩ সালে একই এলাকায় এক নারীর মৃত্যুর পরও সামাজিক বিরোধের কারণে দাহ কার্য বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। তৎকালীন ইউএনও মেহরুবা স্যারের হস্তক্ষেপে তখন শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়।

অভিযোগের বিষয়ে ফোগ্য মার্মা বলেন, “মৃত ব্যক্তি আমাদের সমাজের সদস্য নন, তাই শ্মশান ব্যবহারে আপত্তি জানানো হয়েছে।”
অন্যদিকে, কার্বারী আবুমং মার্মার সাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, “পাড়ার বৈঠকে ১৩টি পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়েছিল; তারা সমাজের কাছে এখনো ক্ষমা চাননি, তাই তাদের শ্মশান ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।”

তবে মানবিক বিবেচনায় এলাকাবাসীর দাবি—ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী একজন মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্য সম্পন্ন করা মৌলিক মানবাধিকার। মৃত্যু কোনো বিভাজন নয়; এটি মানবতার চূড়ান্ত সত্য। তাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে দাহ কার্য নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা গেলে সামাজিক শান্তি ও মানবিক মর্যাদা—উভয়ই রক্ষা পাবে বলে মত প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

জনপ্রিয়

দানেশ ব্লাড ব্যাংকের পথচলার এক যুগ পূর্তি উদযাপন

আলীকদমে প্রবীণ ব্যক্তির সৎকারে বাধা, গ্রামে উত্তেজনা বিরাজমান

প্রকাশের সময় : ০৯:০০:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের বাবুপাড়ায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এক প্রবীণ ব্যক্তির দাহ কার্য সম্পাদনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বাবুপাড়ার বাসিন্দা ময়েচিং মার্মা (৬৮) মারা যান। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ২টায় বাবুপাড়া শ্মশানে তাঁর দাহ কার্য সম্পন্নের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে মৃতের আত্মীয়-স্বজন অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় কয়েকজন সামাজিক নেতা—সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফোগ্য মার্মা ও পাড়ার কার্বারী আবুমং মার্মা—দাহ কার্য সম্পাদনে বাধা দিচ্ছেন।

পরিবারের অভিযোগের পর এলাকাবাসী স্থানীয়ভাবে সালিসের উদ্যোগ নেন। সকলেই মৃত ব্যক্তির ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সৎকারে বাধা না দেওয়ার অনুরোধ জানালেও আপত্তিকারী পক্ষের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে দাহ কার্যকে ঘিরে সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, “মৃত ব্যক্তিকে শ্মশানে দাহ করা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সামাজিক বিরোধ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি।”

এর আগে, ২০২৩ সালে একই এলাকায় এক নারীর মৃত্যুর পরও সামাজিক বিরোধের কারণে দাহ কার্য বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। তৎকালীন ইউএনও মেহরুবা স্যারের হস্তক্ষেপে তখন শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়।

অভিযোগের বিষয়ে ফোগ্য মার্মা বলেন, “মৃত ব্যক্তি আমাদের সমাজের সদস্য নন, তাই শ্মশান ব্যবহারে আপত্তি জানানো হয়েছে।”
অন্যদিকে, কার্বারী আবুমং মার্মার সাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, “পাড়ার বৈঠকে ১৩টি পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়েছিল; তারা সমাজের কাছে এখনো ক্ষমা চাননি, তাই তাদের শ্মশান ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।”

তবে মানবিক বিবেচনায় এলাকাবাসীর দাবি—ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী একজন মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্য সম্পন্ন করা মৌলিক মানবাধিকার। মৃত্যু কোনো বিভাজন নয়; এটি মানবতার চূড়ান্ত সত্য। তাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে দাহ কার্য নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা গেলে সামাজিক শান্তি ও মানবিক মর্যাদা—উভয়ই রক্ষা পাবে বলে মত প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।