১১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

রামগতিতে শ্রমিকদের বাধার মুখে অভিযান বন্ধ করে ফিরে গেল প্রশাসন

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় যৌথ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হওয়া এ অভিযানে উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের চর আফজল গ্রামের কারীর গোজা এলাকায় তিনটি অবৈধ ইটভাটা — আমানত ব্রিকস, মেসার্স জে এস ব্রিকস, এবং আবদুল ওহাব ব্রিকস — গুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

অভিযান শেষে অন্য এলাকায় যাওয়ার পথে রামগতি-তোরাবগঞ্জ সড়কের চৌধুরী বাজার এলাকায় কয়েক শত ইটভাটার শ্রমিক প্রশাসনের গাড়িবহর আটকিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ আমজাদ হোসেন শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন যে আপাতত অভিযান স্থগিত রাখা হবে। এরপর শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

অভিযানে গুড়িয়ে দেওয়া তিনটি ইটভাটার চিমনি ও ভাটা ধ্বংস করা হয় এবং প্রায় ২৭ লাখ কাঁচা-পাকা ইট নষ্ট করা হয়। এসময় আমানত ব্রিকসের মালিককে ২ লাখ টাকা এবং আবদুল ওহাব ব্রিকসের মালিককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দুটি ইটভাটার চারটি অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন ও একটি পোল্ট্রি সংযোগ লাইনও বিচ্ছিন্ন করা হয়।

অভিযান পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক জমির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ আমজাদ হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিক আহমেদ, উপপরিচালক হারুনুর রশিদ পাঠান এবং পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন। তাদের সহায়তা করেন রামগতি থানা পুলিশ, র‍্যাব, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন জানান, “রামগতিতে মোট ৫১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে সরকার অনুমোদিত কেবল বনলতা ব্রিকস, বাকি ৪৯টির কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। আজকের অভিযানে দুটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। শ্রমিকদের বাধার কারণে আজকের মতো অভিযান বন্ধ রাখা হলেও এটি অব্যাহত থাকবে।”

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, “রামগতির ৪৯টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা আমাদের হাতে রয়েছে। এসব ইটভাটার কোনো পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা সবগুলো ইটভাটা বন্ধে একটানা অভিযান পরিচালনা করব।”

জনপ্রিয়

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে হবে: আতাউর রহমান সম্ভু

রামগতিতে শ্রমিকদের বাধার মুখে অভিযান বন্ধ করে ফিরে গেল প্রশাসন

প্রকাশের সময় : ০৯:১৯:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় যৌথ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হওয়া এ অভিযানে উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের চর আফজল গ্রামের কারীর গোজা এলাকায় তিনটি অবৈধ ইটভাটা — আমানত ব্রিকস, মেসার্স জে এস ব্রিকস, এবং আবদুল ওহাব ব্রিকস — গুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

অভিযান শেষে অন্য এলাকায় যাওয়ার পথে রামগতি-তোরাবগঞ্জ সড়কের চৌধুরী বাজার এলাকায় কয়েক শত ইটভাটার শ্রমিক প্রশাসনের গাড়িবহর আটকিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ আমজাদ হোসেন শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন যে আপাতত অভিযান স্থগিত রাখা হবে। এরপর শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

অভিযানে গুড়িয়ে দেওয়া তিনটি ইটভাটার চিমনি ও ভাটা ধ্বংস করা হয় এবং প্রায় ২৭ লাখ কাঁচা-পাকা ইট নষ্ট করা হয়। এসময় আমানত ব্রিকসের মালিককে ২ লাখ টাকা এবং আবদুল ওহাব ব্রিকসের মালিককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দুটি ইটভাটার চারটি অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন ও একটি পোল্ট্রি সংযোগ লাইনও বিচ্ছিন্ন করা হয়।

অভিযান পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক জমির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ আমজাদ হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিক আহমেদ, উপপরিচালক হারুনুর রশিদ পাঠান এবং পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন। তাদের সহায়তা করেন রামগতি থানা পুলিশ, র‍্যাব, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন জানান, “রামগতিতে মোট ৫১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে সরকার অনুমোদিত কেবল বনলতা ব্রিকস, বাকি ৪৯টির কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। আজকের অভিযানে দুটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। শ্রমিকদের বাধার কারণে আজকের মতো অভিযান বন্ধ রাখা হলেও এটি অব্যাহত থাকবে।”

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, “রামগতির ৪৯টি অবৈধ ইটভাটার তালিকা আমাদের হাতে রয়েছে। এসব ইটভাটার কোনো পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা সবগুলো ইটভাটা বন্ধে একটানা অভিযান পরিচালনা করব।”