জমি রেজিস্ট্রির নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ দাবি ও চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় ক্রেতা এবং তার স্বজনদের মারপিটের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এক দলিল লেখক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। মারপিটের একপর্যায়ে অতিরিক্ত ৬০ হাজার টাকা নিয়ে জোরপূর্বক জমি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্রেতা মোঃ সিরাজুল ইসলাম (৫৮) বাদী হয়ে লালমনিরহাট থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ ১৫-২০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের মোঃ সিরাজুল ইসলাম তার ভায়রাদের জন্য জমি কেনার উদ্দেশ্যে প্রতিবেশী দলিল লেখক মোকছেদুল ইসলাম মোস্তফা (৪৮)-এর মাধ্যমে আলাপ-আলোচনা করেন। জমি রেজিস্ট্রির যাবতীয় খরচ বাবদ প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা এবং পরবর্তীতে খাজনা বাবদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। সর্বশেষ ৪৫ হাজার টাকা চুড়ান্ত হলেও, তার মধ্যে ১৫ হাজার টাকা বায়না করা হয়েছিল এবং অবশিষ্ট ৩০ হাজার টাকা রেজিস্ট্রির দিন পরিশোধ করার কথা ছিল।
অভিযোগকারী সিরাজুল ইসলাম, তার শ্যালক শাবলু মিয়া এবং ফুফু মোছাঃ ছায়রা বেগম গত ৪ নভেম্বর বুধবার দুপুর অনুমান ১২:৪৫ ঘটিকার সময় অবশিষ্ট ৩০ হাজার টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন করার জন্য লালমনিরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে উপস্থিত হন। কিন্তু ভেন্ডার মোকছেদুল ইসলাম মোস্তফা পূর্বের চুক্তি ভঙ্গ করে ৩০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। অতিরিক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করায় দলিল লেখক মোকছেদুল ইসলাম মোস্তফা, সহযোগী আনোয়ার হোসেন (৫০) এবং বায়জীদ (৩৫) ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়।
এ সময় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জন দলিল লেখক তাদের তিনজনকে এলোপাতাড়ীভাবে কিলঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে। মারপিটের সময় অভিযোগকারীর পরিহিত পাঞ্জাবীর পকেটে থাকা ১৩,৬০০/- টাকা পড়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত চশমাটি ভেঙ্গে যায়।
পরে রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক হামিদুল ইসলাম এগিয়ে এসে তাদের রক্ষা করেন। তবে, অভিযোগকারীর দাবি, সেখানে রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ৬০ হাজার টাকা গ্রহণ করে রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন করেন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের নিকট প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী জমি ক্রেতা সিরাজুল ইসলাম।
এদিকে জমি রেজিস্ট্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরে প্রকাশ্যে এমন চাঁদাবাজি ও মারপিটের ঘটনা ঘটায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুন্নবী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এস,আর শরিফুল ইসলাম রতন, লালমনিরহাট 


















